ঝিকরগাছা উপজেলার ইতিহাস

ঝিকরগাছা উপজেলার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস,ঝিকরগাছা যশোর,বাংলাদেশ।

ঝিকরগাছা উপজেলার ইতিহাস

ঝিকরগাছা ও ইতিহাস। 

ঝিকরগাছা উপজেলা,বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা একটি প্রাচীন জনপদ। বিভিন্ন তথ্য মতে জানা যায়, বৃটিশ শাসন আমলের দিকে এই অঞ্চলে ইংরেজদের ব্যাপক আশা যাওয়া ছিলো।
তখন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অবিভক্ত অনেক রাজ্য যশোরের গন্ডিতে ছিলো। ঝিকরগাছা উপজেলার নাম করণ ইতিহাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা কালে উঠে এসেছে অনেক তথ্য,জানা যায় সে সময়ে জিংকর নামের এক ইংরেজ বর্তমানের ঝিকরগাছা বাজার সংলগ্ন স্থানে একটি নীল কুঠি স্থাপন করেন। আর সেই নীল কুঠি ঘিরে এখানে একটি বাজার তৈরি হয়। অনেকেরিই অভিমতে জিংকর সাহেবের নাম অনুসারে ওই বাজারকে জিংকরগঞ্জ বলে ডাকা হত। যা কালের পরিক্রমায় ঝিকরগাছা বাজার নামে পরিচিতি লাভ করে। আগেকার সময়ে বাজারকে গঞ্জ বলা হত,সেই ধারাবাহিকতায় জিংকরগঞ্জ থেকে উঠে এসেছে ঝিকরগাছা বাজার।
আবার অন্য এক তথ্য মতে জানা যায়, Jenkings নামের এক ইংরেজ আনুমানিক ১৮০০ সালের দিকে গদখালীতে একটি নীলকুঠি স্থাপন করেন।
এরপর তার নীল কুঠি ঘিরে ম্যাকানজি নামের আরেক ইংরেজ সেখানে কলকারখানা স্থাপন করেন,যার ফলে সে সময়ে গদখালির উন্নয়ন সাধন হয়। তখন ঝিকরগাছাকে ম্যাকানজি গঞ্জ বলা হত। এতে করে ধারনা করা হয় Jenkings থেকেও ঝিকরগাছা নামের উৎপত্তি হতে পারে। তবে ইংরেজ ম্যাকানজিকে ঝিকরগাছার রুপকার বলা হয়।

১৮৬৩ সালে কপোতাক্ষ নদের পশ্চিম পাড় যশোর জেলার অন্তর্ভূক্ত হয়। তখন গদখালীকে যশোরের একটি থানা করার প্রয়োজন পড়ে। গদখালীতে তখন পানীয় জলের প্রচন্ড অভাবের কারণে, যশোরের দিকে ২ মাইল পিছিয়ে বেনেয়ালীতে গদখালীর নামেই গদখালি থানা স্থাপন করা হয়। তখন বেনেয়ালীতে ছিল গভীর বন আর চোর ডাকাতদের অভয়াশ্রম। ম্যাজিষ্ট্রেট বিনফোর্ট এর নেতৃত্বে এ অভয়াশ্রম ধ্বংশ করা হয়। পরবর্তীতে সুবিধামত কোন এক সময়ে যশোর কোলকাতা সড়কের কপোতাক্ষ নদের উভয় পাশে বাজার গড়ে উঠায় থানা বেনেয়ালী থেকে বর্তমান স্থানে চলে আসে।

এরপর ১৯০৯ সালে ঝিকরগাছা থানা গঠিত হয়। ১৯৮৩ সালে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। ১৯৮৮ সালে ঝিকরগাছা পৌরসভা গঠিত হয়।

ঝিকরগাছা বাংলাদেশের যশোর জেলার অন্তর্গত ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের গোয়ালহাটি গ্রামে এক ভীষণ যুদ্ধ হয়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে গোয়ালহাটি যুদ্ধ নামে পরিচিত। ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার অধীনে এই যুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ প্রাণপণ যুদ্ধ করে হানাদার বাহিনীকে পর্যুদস্ত করেন। ক্রমান্বয়ে দেশের প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা হয় যশোর।

আয়তন। 

এ উপজেলার আয়তন ৩০৮.০৮ বর্গকিলোমিটার। ১১টি ইউনিয়ন পরিষধ ও ১৭৯টি ছোট বড় গ্রাম আর মুগ্ধ করা গ্রামের মানুষ গুলোকে নিয়ে আলোড়নে আজ ঝিকরগাছা উপজেলা।

জীবন বৃত্তান্ত। 

এই অঞ্চলের মানুষদের জীবন বৃত্তান্ত অত্যান্ত সুন্দর,এক সময়ে বিলুপ্ত প্রায় জারি সারি পালা গান আর শোলকে যেন মেতে থাকতো তারা। কৃষি নির্ভর মানুষ গুলোর সাদাসিধা জীবনযাত্রা সত্যিই মুগ্ধ করবার মত।
ধান,পাট,গম,আর বাহারী ফুলের মেলায় রংগিন হয়েছে ঝিকরগাছা। ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালিকে বাংলাদেশের ফুলের রাজ্য বলা হয়।
ফুল চাষিদের ব্যাস্ত জীবন যাত্রা,ফুল বিক্রি করার চিত্র,সব মিলিয়ে এখানে জমে ফুলের মেলা।
আর এই কারণেই যশোরকে বলা হয় ফুলের রাজধানী।
কৃষি মৎস্য আর শিক্ষা স্বাধীনতা সব মিলিয়ে প্রাচীন কন্ঠে আবারও বলতে চাই এই জনপদ একদিন এগিয়ে যাবে বহুদুর। তাইতো হৃদয়ের বন্ধনে জড়িয়ে থাকে প্রাণের ঝিকরগাছা ওরফে ফুল পাখি আর সবুজের রাজ্য।
সাথে সাথে বেত্রাবতী আর কপোতক্ষ নদের কোল ঘেঁষা এই সবুজের স্পন্দে আলোকিত হয়েছিলো ঝিকরগাছার যত কৃতি সন্তানদের জীবন।
বুক ভরা বাওড়ের মুক্ত নিশ্বাস আর উড়ে যাওয়া পাখিদের দল ছুট দেখতে চাইলে যশোরের ঝিকরগাছা ই বেস্ট। চোখ জুড়িয়ে যাবে ফুলের সৌন্দর্যে আর মন ভরে যাবে ফুলের সৌরভে।
আশাকরি কিছুটা ভালো লাগবে
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url